শিক্ষাগত অভীক্ষা কাকে বলে? শিক্ষাগত অভীক্ষার শ্রেণীবিভাগগুলি উল্লেখ কর।

 শিক্ষাগত অভীক্ষা কাকে বলে?

 শিক্ষাগত অভীক্ষার শ্রেণীবিভাগগুলি উল্লেখ কর।



<b>{tocify} $title={Table of Contents}</b>

শিক্ষাগত অভীক্ষা : 

অভীক্ষা হল এক ধরণের পরিমাপক কৌশল বা যন্ত্র। আর কতকগুলি সুনির্বাচিত উদ্দীপকের সমবায়, যাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে এমন কতকগুলি আচরণ বা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করা যায়, তাদের বলা হয় শিক্ষাগত অভীক্ষা। অন্যভাবে বলা যায়, বর্তমানে যে কৌশল শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত পারদর্শিতা ও অন্যান্য অনুষঙ্গিক বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাদের শিক্ষাগত অভীক্ষা বলা হয়। এখানে উদ্দীপক বা অভীক্ষাপদগুলিকে এমনভাবে নির্বাচন করা হয়, যার দ্বারা শিক্ষার্থীর পারদর্শিতার পরিসরটি অন্তর্ভুক্ত হয়। অর্থাৎ, শিক্ষার্থীর বিভিন্ন শিক্ষালব্ধ বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করার জন্য যে অভীক্ষা প্রস্তুত করা হয়, তাদের শিক্ষাগত অভীক্ষা বলা হয়।


শিক্ষাগত অভীক্ষার শ্রেণীবিভাগ :

১. পারদর্শিতার অভীক্ষা : যে অভীক্ষাগুলির দ্বারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিমাপ করা হয় এবং সেই যোগ্যতার পরিমাপ একটিমাত্র সংখ্যামান দ্বারা প্রকাশ করা হয়, তাদের বলা হয় পারদর্শিতার অভীক্ষা। বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্র যেসব পারদর্শিতার অভীক্ষা ব্যবহার করা হয়, তাদের আদর্শায়নের মান অনুযায়ী দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।

আবার পারদর্শিত অভীক্ষাগুলির উদ্দেশ্য এক হলেও পরিমাপের ক্ষেত্রের বিস্তৃতি অনুযায়ী সেগুলিকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়- (ক) বিষয়কেন্দ্রিক পারদর্শিতার অভীক্ষা, (খ) একক অভীক্ষা এবং (গ) পারদর্শিতার অভীক্ষাগুচ্ছ।


২. নির্ণায়ক অভীক্ষা : শিক্ষাক্ষেত্র শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বা পারদর্শিতা সংক্রান্ত ত্রুটিগুলি এবং সেই সংক্রান্ত ভালো দিকগুলি সঠিকভাবে চিহ্নিত করার জন্য বিশেষ এক জাতীয় অভীক্ষা ব্যবহার করা হয়, যার মূল উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীর জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রে দুর্বলতাগুলি নির্ণয় করা। এই উদ্দেশ্যে গঠিত শিক্ষাগত অভীক্ষা এই জাতীয় নির্ণায়ক অভীক্ষাগুলি শিক্ষককে তাঁর বিশেষ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে এবং পরবর্তী শিক্ষণ পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে রচনা কাতে সাহায্য করে।


৩. পূর্বাভাস সূচক অভীক্ষা : শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্ষেত্রে ভবিষ্যৎশিক্ষাগত সফলতার সম্ভবনা সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়ার জন্য এক ধরণের অভীক্ষা ব্যবহার করা হয়, যা পূর্বাভাস সূচক অভীক্ষা নামে পরিচিতি। শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কোন বিষয়ে বা বিষয়ের অংশে অধিক সাফল্য অর্জন করতে পারবে, তা এই অভীক্ষার দ্বারা নির্ণয় করা হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ে শিক্ষাগত অভীক্ষার এই শ্রেণিবিভাগটির সহ-সম্বন্ধ অনেক বেশি। তাই শিক্ষাক্ষেত্র এই অভীক্ষা বেশি কার্যকরী। এই জাতীয় অভীক্ষার উদাহরণ হিসেবে রাইটস্টোন ও টুলির অভীক্ষা বা সাইমুন্ডের ভাষাগত পারদর্শিতার অভীক্ষার কথা বলা যায়।


৪. নিরীক্ষণমূলক অভীক্ষা : যে সব শিক্ষাগত অভীক্ষাগুলি বিশেষভাবে শিক্ষণ ব্যবস্থার মূল্যায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেগুলিকে নিরীক্ষণমূলক অভীক্ষা বলা হয়। এই জাতীয় অভীক্ষাগুলি সাধারণত খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এই জাতীয় অভীক্ষাগুলির দৃষ্টান্ত হিসেবে বিদ্যালয়ে যে সপ্তাহিক, মাসিক এবং ত্রৈমাসিক পরীক্ষাগুলি নেওয়া হয়, তাদের কথা বলা যায়। এই জাতীয় অভীক্ষাটি সাধারণতঃ অল্প সময়ের ব্যবধানে নেওয়া হয়ে থাকে।

শিক্ষাগত অভীক্ষাগুলিকে উল্লেখিত শ্রেণীতে ভাগ করা হলেও পরস্পরের উদ্দেশ্যটি পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। যদিও যে কোন একটি অভীক্ষার দ্বারা বিভিন্ন দিক সম্পর্কে কিছু না কিছু ধারণা পাওয়া যেতে পারে তবু ও উক্ত শ্রেণিবিভাগগুলি | গ্রহণ করার সময় অভীক্ষাগুলির মুখ্য উদ্দেশ্যটি পর্যালোচনা করা দরকার।

Post a Comment

Previous Post Next Post